404 Not Found

কষ্টিপাথর-২ (মানসাঙ্ক) - Sean Publication
কষ্টিপাথর-২ (মানসাঙ্ক)
কষ্টিপাথর-২ (মানসাঙ্ক)

কষ্টিপাথর-২ (মানসাঙ্ক)

লেখক : ডা. শামসুল আরেফীন
প্রকাশনী : সমর্পণ প্রকাশন
বিষয় : পরিবার ও সামাজিক জীবন
পৃষ্ঠা : 224, কভার : পেপার ব্যাক

সম্পাদক : আসিফ আদনান

179

You Save TK. 96 (35%)

কষ্টিপাথর-২ (মানসাঙ্ক)

Share This Book:

ক্যাশ অন ডেলিভারী

৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন

ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু

Description

প্রতি যুগে যে গোষ্ঠীর মানুষ যে যে বিষয়ে উৎকর্ষের অহঙ্কার করেছে, আল্লাহ তাদের সেই সর্বোচ্চ পারফর্মেন্সকে চ্যালেঞ্জ করেছেন নিজ প্রেরিত নবীদের সত্যতা প্রমাণের জন্য। একে মুজিযা বলে। মুসা আলাইহিস সালামকে দিয়ে ‘যাদুবিদ্যা’কে চ্যালেঞ্জ করিয়েছেন, ঈসা আলাইহিস সালামকে দিয়ে ‘চিকিৎসাশাস্ত্র’কে।
শেষনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব দেশের জন্য, সব যুগের জন্য। তাই তাকে এমন একটা কিছু দিতে হবে, যা সব দেশের উৎকর্ষের মোকাবেলায় তাদেরকে হতবাক করে দেবে। সব যুগের উৎকর্ষকে চ্যালেঞ্জ করে অবাক করে দেবে বোদ্ধাদের। আরবে প্রথম যুগ ছিল কাব্যসাহিত্যের, কুরআন এসে সেই সর্বোচ্চ পারফর্মেন্সকে চ্যালেঞ্জ করেছে-সমালোচনা নয়; পারলে এরকম একটা কিতাব, নয়তো একটা সূরা, কমসেকম একটা আয়াতই লিখে নিয়ে এসো। আরব স্বভাবকবিরা হয়রান হয়ে ঘোষণা করে দিয়েছে- এটা কোন মানুষের রচনা নয়।
বর্তমান যুগ-পর্যবেক্ষণলব্ধ জ্ঞানের, যাকে আমরা ‘বিজ্ঞান’ নামে চিনি। আমাদের সর্বোচ্চ পারফর্মেন্স বিজ্ঞান, আমাদের অহংকার। মানবসভ্যতা এতো ক্ষমতা আগে কখনও পায়নি। আজও তাহলে কুরআনের চ্যালেঞ্জ করার কথা আধুনিকতম সব আবিষ্কারকে। আর বোদ্ধাদের হবার কথা হয়রান, নির্বাক, হতবুদ্ধি। এসো, সমালোচনা তো রাস্তার পাগলেও করতে পারে; পারলে এর মত বা আরও ভাল সমাধান বাতলে দেখাও। চ্যালেঞ্জ।

Author

Author

ডা. শামসুল আরেফীন

Reviews (2)

2 reviews for কষ্টিপাথর-২ (মানসাঙ্ক)

  1. Ruponti Shahrin

    **বাস্তবতা এতই করুণ যে, পরিস্ফুটিত গোলাপ আজ নৈতিকতাবিহীন দৃষ্টিকোণ আর পাশবিক মানসিকতার বুটের তলায় আজ পদদলিত। **
    ধর্ষণের জন্য নারীর পোশাক নাকি ধর্ষকের লোলুপ দৃষ্টি, মানসিকতা আর আকর্ষণ কোনটা বেশি দায়ী এই প্রশ্নে যখন সমাজ রমরমা, তখন একদল বাজারে নিয়ে এলো, ”গা ঘেঁষে দাঁড়াবেন না”। হাস্যকর হলেও সত্যি যে, মানবজাতির এ সকল সমস্যার সমাধান যে কিতাবে তা বাস্তবায়ন না ঘটলে কী সমাজের এই চিরশত্রু লাঘব সম্ভব এর পেছনেও রয়েছে নানা মুনির নানা মত।
    স্বাভাবিকভাবে দেখলে প্রত্যেকটি মানুষকে যার যার অবস্থান থেকে ভালো প্রতিপন্ন হয়। কিন্তু প্রত্যেক মানুষের মাঝে একটি পশু সত্তা রয়েছে। তাহলে মানুষ কেমন? এই প্রশ্ন হাতড়ে পাওয়া যায় অনেক উত্তর।
    তবে আমরা মানুষরা একটু সুযোগ পেলেই নিজের শক্তিমত্তাকে কাজে লাগাই নেতিবাচকভাবে। মানুষের মানসিকতার এই নেতিবাচক প্রভাবের উপর গবেষণা করা হয়েছিল একটু ব্যাতিক্রমভাবে। জানতে চান? আমিও অবাক হয়েছি।
    স্ট্যানফোর্ড প্রিজন এক্সপেরিমেন্ট। ১৯৭১ সালে আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিস্ববিদ্যালয়ের একটি এক্সপেরিমেন্ট চালানোর উদ্দেশ্য ছিল কিছুটা অন্যরকম। জেলখানার বন্দী ও রক্ষীদের মধ্যে প্রায় প্রায় দ্বন্দ্ব দেখা যায়। কিন্তু এর মূল কারণ উদঘাটন করা কস্টকর। তবে দেখা যেত এই তিক্ত সম্পপ্পরকের কারণ হলো কিছু কিছু রক্ষীর সহজাত নিষ্ঠুরতা ও নিষ্ঠুরতাকে উপভোগ করার প্রবণতা । তারপর একদিন এক্সপেরিমেন্টের জন্য বেছে নেওয়া হয় ২৪ ছাত্রকে। ১২ জন থাকবে বন্দীর ভূমিকায় আর ১২ জন রক্ষীর। ১৫ দিন রাখা হবে বানানো জেলখানায়। পুরোটা সময় তাদের তদারকি করা হবে ভিডিও প্যানেলের মাধ্যমে। কিন্তু এ কী! ৬দিনের মাথায় দফা রফা। ক্ষমতা পেয়ে রক্ষীদল হয়ে উঠলো মানুষরুপী পশু। নিষ্ঠুরতা ও অমানবিকতাও তাদেরকে পেয়ে বসলো।
    তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে, মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন। মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে অপ্রত্যাশিত ফলাফল স্বাভাবিকভাবেই সবকিছুকে ভড়কে দিয়েছে। বিশ্বে বহু রিহ্যাব রয়েছে, রি–এডুকেশন ক্যাম্প, এসাইলাম, কিশোর উন্নয়ন, সন্ত্রাসিদের মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়নের জন্য কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু ফলাফল কী? শুন্য। তাহলে বলা যায় যে, আইনের শাসন কিংবা বিচার ব্যবস্থাই নয়, বরং সামগ্রিকভাবে আরও কিছু প্রয়োজন মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে।
    যারা খুন করেন, গুম করেন আবার বাড়িতে স্ত্রীকে ভালোবাসেন, যারা বউ পেটান আবার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেন, যারা সন্তানকে স্কুলের হোমওয়ার্ক করান আবার নেশা করেন, যারা বাসের মহিলাদের উত্যক্ত করেন আবার বোনের খেলার সাথী হয়ে যান বাড়িতে তারা সকলেই মানুষ। খুব স্বাধারন মানুষ। কারও কাছে তারা মাটির মানুষ, আবার কারো চোখে সাক্ষাত জম। কিন্তু আড়ালে আবডালে তাদের জৈবিক কামনা তাদের করেছে পশু। তাহলে এর সমাধান কোথায়?
    স্যাডিস্টের রুচি, রেপ মিথে বিশ্বাস করা, নারীর প্রতি ক্ষোভ, স্বভাবতই রাগী, সুযোগসন্ধানী এইরকম মানুষের অভাব নেই। তারাই মুলত মেইন মোটিভ। কিন্তু মানুষের মন নির্জনতা খোঁজে, যেখানে উদ্দিপক হিসেবে কাজ করে ক্যাটালিস্ট, আর মেন্টাল সেট আপ তো আছেই। জরিপের কথা এখানে আর তুলেই আনলাম না, রোজকার খবরের পাতায় তো দেখতেই পাচ্ছেন। একটি আসে, তো কয়েকদিন বাদেই আরেকটি খবরে পেছনের খবর ভুলি। কিন্তু সমাধানের পথ হিসেবে যা দেখানো হয়, তা কতটা কার্যকরী? অনলাইনে ছড়িয়ে আছে মরণ ছোবল। আমাদের তরুণ প্রজন্ম এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। আসলে তরুণদের এভাবে দমিয়ে রাখা গেলে একদল লোকের প্রচুর উপকার। তবে এই উদ্দিপক মিডিয়া সমাজে দারুণভাবে জেঁকে বসেছে ধর্ষণ।
    সাময়িক শোক, নিন্দা ও ক্রোধকে উপেক্ষা করে কীভাবে ধর্ষণের এই মহামারীকে বন্ধ করা যায়?
    আপনি নিজে কখনও ভেবে দেখেছেন কি? না ভাবলে একটু ভাবুন। আমাদের সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতেই লেখক হাতে তুলে নিয়েছিলেন কলম। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে আজকের মানসাঙ্ক।
    পাঠ উপলব্ধিঃ
    প্রথম প্রশ্ন হলো মানসাঙ্ক কাকে বলে?
    যদি ব্যবচ্ছেদ করি, তাহলে দাঁড়ায়, মানস + অঙ্ক = মানসাঙ্ক। মানস অর্থ মন এবং অঙ্ক অর্থ গণিতের রাশি গণনা। সুতরাং যে অঙ্ক মনে মনে করতে হয়, তাকে মানসাঙ্ক বলে।
    মানুষের মন সমীকরন অত্যন্ত জটিল। আর যিনি এই মন মানসিকতার সৃষ্টিকর্তা তিনি ছাড়া আর কে ভালো বলতে পারবেন, যে এই মনের খোরাক কি হতে পারে! লেখক বিশ্লেষণ করেছেন একেবারে ধরে ধরে, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। মানুষ যেহেতু ভালো মন্দ দুটিকেই ধারণ করে, তাই মানুষের সাইকোলজি জানা খুব প্রয়োজন। সেহেতু ”মেয়েটারই দোষ” কিংবা ”পুরুষতত্ত্বই বিষাক্ত” এমন যুক্তি খাড়া করে কোন লাভ নেই।
    ৫ ধরনের ধর্ষকের মাঝে ৩ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর ছাড়াও রিস্ক ফ্যাক্টর থেকেই যায়। সেক্ষেত্রে নারীপুরুষ সমান দায়ি। দাম্পত্য জীবনে, কিন্তু বিবাহবহির্ভূত সম্পকে, ছেলে—মেয়ের অবাধ মেলামেশা, কিংবা বিপরীত লিংগের প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করা থেকেই যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে তা একপ্রকার মহামারী আকারে ছেয়ে গেছে পুরো বিশ্বে। আজ কোথায় তাকালে এই ধর্ষণ নামক অবক্ষয় চোখে পড়ে না? তার জন্য কি শুধু বিচার ব্যবস্থা, মানসিকতা আর টুকরো কাপড় দায়ী? না আসলে তা নয়। মানুষের মাঝে আজ সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভয় কাজ করে না। শুধু কারাগার আর আইন প্রয়োগ কিংবা শাস্তির ব্যবস্থা সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হলে আজ আমুল পরিবর্তন আসতো সমাজে, কারণ বিজ্ঞানও পাল্লা দিয়ে উন্নত হচ্ছে। কিন্তু না আমরা আবার ১৪০০ বছর পেছনে ফেরত যাবো। কারণ কি এমন বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল সমাজে মাত্র একটি কিতাবের দ্বারা, যার বাস্তবায়নে আমুল পরিবর্তনের সাথে রাতারাতি শান্তি নেমে এসেছিল গোটা রাস্ট্রে!
    লেখক ”ডাবল স্ট্যান্ডার্ড” কিংবা ”কস্টিপাথর” নাস্তিকদের অবমূল্যায়ন করে লেখেন নি। না তিনি এই বই লিখেছেন সেক্যুলার সমাজের জন্য। আমাদের ইলম এর যে শিক্ষা আলেম সমাজ, সাহাবিগণ আমাদের ধরে রাখতে দিয়ে গিয়েছিলেন সেই মস্তিস্কে আজ জমেছে শৈবাল। আমরা আজ অনুসারী হয়েছি সেই ক্রুসেডারদের। আফসোস, যে তাদের থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হয়, নিতে হয় ফয়সালা। আমাদের জং ধরা বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রুসেডকে জাগিয়ে তুলতে, দুর্বল মুমিনদেরকে ইসলামের সঠিক শিক্ষা মনে করিয়ে দিতেই এই বইকে লেখক নিয়ে গিয়েছেন রিসার্চের পর্যায়ে। যথাপোযোগী পাদটীকা, ইংরেজি বইয়ের উদ্ধৃতি সাথে অনুবাদ লেখার মানকে করেছে অসাধারণ। সবচেয়ে ভালো ছিল পয়েন্ট আকারে সাজানোর কৌশল। ইসলামের মহিমা, কিংবা আল্লাহর হুকুম আহকাম যে কতটা ফলপ্রসু তা বোঝাতে লেখক একটুও কার্পণ্য করেন নি। বরং এই সময়ের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ লেখা তিনি ধারণ করেছেন।
    ইতস্তত করার মতো অনেক বিষয় আছে, যা লোকমুখে শুনতে, বলতে বা আলোচনা করতে অথবা জানার জন্য হলেও রিসার্চ করতে অনেক সময় লজ্জা ও কুন্ঠাবোধ করি। কিন্তু এগুলো জানা জরুরি। কারণ বাঁচতে হলে জানতে হবে, জানাতে হবে। লেখার মাধ্যমে অনেক কঠিন বিষয় সহজে জানানো যায়। সেদিন বিবেচনা করলে এমন সব বিষয় উঠে এসেছে যা চাইলেও কাউকে সহজে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তাতে এসকল নৈতিক শিক্ষা দেওয়া কঠিন হয়ে যায়। এমন একটি সাহসী পদক্ষেপে লেখা বই খুব গভীর আলোচনা থাকাতে যে কাউকে শেখানো যায় মানবীয় গুণাবলীর নানাদিক, ভালো-মন্দ। কর্মস্থল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা, বাসা, আত্মীয়, ম্যারিটাল রেপ, মোড়ক নয়তো মড়ক, রুপ লাগি আখি ঝুরে, বিড়াল চলন, হ্যাং আউট, নীল সাগরের সমাধি, মন জানালায় উঁকি, অলস মস্তিস্ক, পূর্ণদৈর্ঘ্য বিনোদন, কি আছে এসবে? আছে সমাধান এই শিরোনামের যুক্তিতে। শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নন লেখক। এইরুপ আরও বহু সমাধানের যুক্তিবুদ্ধিতে তিনি কুপোকাত করেছেন সুশীল সমাজকে।
    ক্ষুরধার শব্দচয়ন, অর্থপূর্ণ বাক্য, প্রত্যেকটি সয়ংসম্পূর্ণ পয়েন্ট আপনাকে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে উচিত ও অনুচিতের কাঠগড়ায়। বাকিটা আপনিই বিচার করুন।
    **বইয়ের অনেকগুলো প্রিয় অংশের একটি হলোঃ **
    ”মানুষ এমনই। যদি নিয়ম না থাকে, শাস্তি ও শৃঙ্খলার কাঠামো না থাকে, তাহলে মিথলজিকাল মানবতা খুব দ্রুত পাশবিকতা কিংবা হয়তো পৈশাচিকতায়ও পরিণত হয়। উপযুক্ত পরিস্থিতিতে আমরা সবাই সম্ভাব্য অপরাধী। নিয়মের বেড়াজাল ছাড়া আমরা সবাই পশু। বুদ্ধিমান, বুঝদার, হিসেবি-পশু। তাই মানবতা, সামস্টিক বিবেক, মানুষের সহজাত মহানুভবতা, কিংবা বিবেচনাবোধের মতো ধারনাগুলোর ওপর আশা রাখলেও, ভরসা করে বসে থাকা যায় না। বিশেষ করে অপরাধ, অপরাধপ্রবণতা এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রনের প্রশ্নে। সর্বোত্তমের প্রত্যাশা নিয়েই আমাদের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়।”

  2. নাফিসা ইয়াসমিন

    প্রারম্ভিকা
    —————
    আধুনিক বিশ্ব সভ্যতায় মহামারী আকারের‌ যে বিষফোঁড়া মানবসমাজ এর অবক্ষয়ের কারণ সেটা হলো “ধর্ষণ”।
    ধর্ষণ এমনই একটা হিংস্র শব্দ যা ত‌ৎক্ষণাৎ মানুষের অন্তরকে ক্ষতবিক্ষত করে দিতে প্রস্তুত।
    ধর্ষণে সবথেকে এগিয়ে আমাদের স্বপ্নের দেশগুলো,প্রথম বিশ্ব।এই মহামারির‌ কবল থেকেপিছিয়ে নেয় আমাদের দেশের মত গরীব দেশ‌ও।
    সকালে চায়ের‌ কাপ থেকে সান্ধ্য আড্ডার পত্রিকাতে ধর্ষণ শব্দটা পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে মানুষের প্রত্যহ রুটিনে‌। পত্রিকার পাতা খুললেই চোখে পড়ে ‘ধর্ষণ তারপর হত্যা।’গর্ভবতী নারী থেকে শুরু করে অবুঝ শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না এই ছোবল থেকে।

    সবশেষে আমাদের সাময়িক শোক আবর্তিত হয় নিউজ সাইকেলের সাথে। তার সাথে চলে কিছুদিন সভা-সেমিনার-র‍্যালি, মোমবাতি মিছিল,আইনের পরিবর্তন —— কিছুদিন চলে হুজুগে লাফালাফি দিন দু’য়েক পর আবার এই হুজুগেপনা ইউজলেস টিস্যুর মতো পড়ে থাকে নতুন এক ইস্যুর অতলে।
    ধর্ষনের জন্য কে দায়ী?
    পুরুষের হীন মানসিকতা নাকি নারীর খোলামেলা চলাফেরা?
    বিজ্ঞনমনস্করা মানবমনের সমস্যাগুলোকে তুলে ধরেন ঠিক‌ই কিন্তু এর সমাধানে পৌঁছানোর সাধ্য তাদের‌ নেই।

    সব উত্তর মিলবে ‘মানসাঙ্ক’ বইতে। এতে ফুঁটে ওঠেছে বিভিন্ন গবেষণাধর্মী তথ্য-উপাত্ত, সমস্যা চিহ্নিতকরণ; এসেছে প্রতিটির সমাধান। এবং প্রতিটি সমাধানে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ এবং সবশেষে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে ধর্ষণ ও নারীদের ওপর যৌন-হয়রানি বিষয়ে সম্ভবত এই বইটি প্রথম।

    লেখক – পরিচিতি
    ————————–
    লেখক ড. শামসুল আরেফীন পেশায় একজন চিকিৎসক। বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি অত্যন্ত গ্রহনযোগ্য একজন লেখক। তাঁর লেখা এই প্রজন্মের অনুপ্রেরণা। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দিয়ে লেখালেখি শুরু করেন। পরবর্তী ব‌ই কষ্টিপাথর, কুররাতু আইয়ূন ১ ও ২, ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ২.০ এবং মানসাঙ্ক।
    দিনশেষে স্রষ্টাপ্রদত্ত সমাধানে মানবসভ্যতার ফিরে আসা ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই এ কথাই ফটে ওঠে তার লেখায়।

    ব‌ইয়ের আলোচ্য বিষয়
    ———————————
    মানসাঙ্ক ব‌ইটির মূল বিষয়বস্তু শুধু ধর্ষণ নয় , লেখক ড. শামসুল আরেফীন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বিশদে গভীর আলোচনা করেছেন মানব-মনের জটিল স্তর,কাম প্রবৃত্তির প্রকারভেদ, অপরাধপ্রবণতা এবং তার ধরণ, উদ্দীপক ও পরিবেশ কিভাবে সাধারণ যৌনপ্রবৃত্তি মানুষকে বিকৃত করে তোলে এবং মানুষের মনের‌ নিষিদ্ধ চাহিদা , অন্তরের নিষিদ্ধ গহ্বরের হদিশ এইসব সম্পর্কিত গবেষণাধর্মী তথ্য-উপাত্ত, সমস্যা চিহ্নিতকরণ এবং সমস্ত কিছুর সমাধান রয়েছে আল্লাহ রচিত জীবন-বিধানে।
    পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা মানব-মনের সমস্যা গুলো নিঁখুতভাবে পর্যালোচনা করেছে ঠিকই কিন্তু পৌঁছাতে পারেনি সমাধানের শেষ বিন্দুতে, সমাধান দিতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছে সেই সমস্যাগুলোর মধ্যেই যার ফলস্বরূপ ধর্ষণের মতো ব্যাধি আর‌ও প্রকটভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বসংসারে।

    প্রতিটি যন্ত্রের যেরকম ম্যানুয়াল থাকে পরিচালনা করার জন্য তেমনি এই মানবজাতি তথা সমগ্র বিশ্বজগতের স্রস্টা তাঁর সৃষ্টি মানুষকে পরিচালনা করার জন্য এক “ম্যানুয়াল” তথা “লাইফ-কোড “পাঠিয়েছেন তাঁর‌ প্রিয় রাসূলের মাধ্যমে।
    সেই চোদ্দোশো বছর আগে আগত স্রস্টা রচিত জীবন-বিধান‌ই মানবতার একমাত্র মুক্তির উপায়।

    ব‌ই-আলাপন
    ——————–
    মানসাঙ্ক ব‌ইটিতে মূল তিনটি অধ্যায় এবং এই তিনটি অধ্যায়ের‌ মধ্যে অনেক ছোট ছোট উপবিভাগ রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে।

    🔵প্রথম অংশে রয়েছে—
    ⭕মানসাঙ্ক
    এই অংশে আলোচিত হয়েছে,
    ✔️ধর্ষণ কি? এবং এর কারন কি?
    ✔️মানবমনের চোরাগলি, অন্ধকার অলিগলির হদিশ:-
    আধুনিক মনোবিজ্ঞানের ভাষায় মনের তিনটি স্তর‌ রয়েছে :
    ১) চেতন স্তর
    ২) অবচেতন স্তর
    ৩) অচেতন স্তর

    ✔️সব ধর্ষণের একটা কমন ফর্মূলা রয়েছে:-
    ⚫ফ্যাক্টর ১. মেন্টাল সেট-আপ
    ⚫ পরিবেশ(সেটা হতে পারে পরিস্থিতির সাপেক্ষে নির্জন অথবা পরিকল্পিত ভাবে সৃষ্ট নির্জন)
    ⚫উদ্দীপক বা স্টিমুলাস।

    ✔️ধর্ষক কারা
    আশ্চর্যের বিষয় হলো ৮% বাদে বাকি ‌৯২% ধর্ষক‌ই স্বাভাবিক রুচির, যৌন-আগ্রহের মানুষ। সুতরাং বহুল প্রচলিত ধারণা ধর্ষক মানেই বিকৃত রুচির এটা ভুল।
    আমাদের স্বীকার করতে হবে যে ,যারা ধর্ষণ করছে তাদের অধিকাংশই আমার আপনার মত সাধারণ মানুষ, গৃহী মানুষ, ভালো-মন্দের সহজাত ক্ষমতা রাখা মানুষ। এগুলো নিতান্ত মানবিক নিষ্ঠুরতা, কোন মানসিক বিকার‌ নয়।এর পিছনে রয়েছে মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি, বর্তমান সামাজিক কাঠামো,সংস্কৃতি ও রাস্ট্রের বাস্তবতা।

    🔵দ্বিতীয় অংশ
    ⭕মানসাঙ্কের সমাধান (পশ্চিমাদের সমাধান)
    —————————————————————
    আমাদের স্বপ্নের দেশগুলোতে কিভাবে মেয়েরা যৌন হেনস্থার শিকার হয় প্রতিনিয়ত।
    ৫৭% নারী যৌন হয়রানির‌ শিকার ১৪- ১৭ বছর বয়সের মধ্যেই।৫১% বিনানুমতিতে স্পর্শ এবং ৩৮% যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে কর্মস্থলে।
    যৌন হেনস্থা সেখানে ডালভাতের মত সহজ ব্যাপার।
    এই অংশে লেখক দেখিয়েছেন উন্নত বিশ্বে মনে করে সহশিক্ষা ব্যবস্থা চালু করলে এবং ফ্রি সেক্স এর অনুমতি দিলেই ধর্ষনের মত ঘটনা গুলো আর ঘটবে না।
    অথচ এই ফ্রি সেক্স, পতিতালয় ধর্ষণের ঘটনাকে আর‌ও বেশি ত্বরান্বিত করে।
    সমস্ত কিছু রেফারেন্স ও প্রমাণ দলিল সহ লেখক উপস্থাপন করেছেন।

    🔵শেষ অধ্যায়
    ⭕আমাদের সমাধান(ইসলাম কি বলে?)
    মানব রচিত বিধি বিধানে ধর্ষণ কখনো বন্ধ হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবেনা, শুধুমাত্র ধর্ষণের হার বৃদ্ধি পাবে উত্তরোত্তর।
    এই অংশে লেখক বিভিন্ন যুক্তি ও বৈজ্ঞানিক রেফারেন্স এর মাধ্যমে দেখিয়েছেন ইসলামী অনুশাসন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিলেই ধর্ষণ সম্পর্কিত সকল কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করা শুধু নয় সমস্ত সামাজিক ও মানবিক ব্যাধি নির্মূল করা সম্ভব কারণ ইসলাম শুধুমাত্র স্রস্টার রচিত জীবন-বিধানে।ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার কথা বলে।
    ইসলাম কখনো মানবজাতির বিচ্ছিন্ন কোন ব্যক্তি, পোশাক কিংবা লিঙ্গের প্রতি ফোকাস করেনা, একটি সম্পূর্ণ ব্যবস্থা দেয় যা সব ধরণের যৌন অপরাধকে নিয়ন্ত্রন করে স্থায়ী সমাধান দেবে।

    পাঠ্য-অনুভূতি
    ———————
    মনোবিজ্ঞান সম্পর্কিত এটাই আমার প্রথম পড়া ব‌ই। এমন‌ই একটা ব‌ই যা অল্প সময়ের মধ্যেই গভীর ভাবনায় ডুবিয়ে দেয়। হতবিহ্বল করে দেয় মনোবিজ্ঞানের সূক্ষ বিশ্লেষণ, মনের জটিল স্তর, মানবিক চাহিদার খবর জেনে। আমরা সব‌ই জানি বুঝি কিন্তু বুঝতে চাইনা কারণ লুকিয়ে রাখি নিজের স্বত্বাকে।
    এই ব‌ই যা মানুষের মনের অলিগলি চষে চোরাগলি র খবর নিয়ে এসেছে।
    অবাক লাগে, যারা ধর্ষকের মত অপরাধী তারাও আমার আপনার মত খুব সাধারণ মানুষ। এক কথায় ধাক্কা দেয় নিজের মনের অন্তরালে লুকিয়ে রাখা অবচেতন মনকে।

    কেন পড়বেন
    ———————
    নিজেকে জানতে, নিজের মানবীয় অস্তিত্বকে পরোখ করতে পড়বেন। জানবেন মনের চোরাগলির খবর। আপনার অজান্তেই অবচেতন মনের কুঠুরিতে যে সূক্ষ তরঙ্গের খেলা চলে যার তাড়নায় অপরাধ প্রবণতা লালিত হয় সেই নিষিদ্ধ কুঠুরির খবর।
    জানবেন মানুষ মৌলিকভাবে ভালোও না আবার খারাপ‌ও না। মানুষ হলো মানবিক স্বত্বা যা স্বর্গীয় ও পাশবিক ,সাদা ও কালোয় মেশানো।যে মানুষ অবিশ্বাস কল্যাণের ক্ষমতা রাখে সেই ক্ষমতা রাখে অচিন্তনীয় নিষ্ঠুরতার।এই ভালো মন্দ দুই ধারণ করেন আমি আপনি,এই দুই ক্ষমতা নিয়েই ঘুরে বেড়ায় আমরা।
    এবং জানবেন এসবের সমাধান মানবরচিত সংবিধানে সম্ভব নয়। সম্ভব শুধুমাত্র রব রচিত বিধানে।

    শেষ কথা
    —————
    বেলাশেষে পাখি যেমন নীড়ে ফেরে যেখানে আছে তার নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং সর্বোপরি স্বাধীনতা ।তেমন‌ই মানবসভ্যতার মুক্তির পথ নিহিত স্বয়ং রাব্বুল আলামীনের রচিত জীবন বিধানে, কারণ বিশ্বজগতের মহা প্রতিপালক তাঁর‌ তামাম সৃষ্টির পরিচালনার জন্য‌ই প্রেরণ করেছেন আল-কুরআন। তিনিই জানেন তাঁর সৃষ্টির ভুল‌ ত্রুটি প্রকৃতি সম্পর্কে এবং তিনিই অবগত কিসে মন্দ, কিসে ভালো।
    নির্মল পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা হোক আল্লাহর শাসন।

    ব‌ই: কষ্টিপাথর-২ (মানসাঙ্ক)
    লেখক : ডা. শামসুল আরেফীন
    প্রকাশনী : সন্দীপন প্রকাশন
    বিষয় : পরিবার ও সামাজিক জীবন
    পৃষ্ঠা : 224,
    কভার : পেপার ব্যাক
    সম্পাদক : আসিফ আদনান
    মুদ্রিত মূল্য: ২৭৫ টাকা

Add a review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping cart
Sign in

No account yet?

ধন্যবাদ, আপনার প্রি-অর্ডারটি গ্রহণ করা হয়েছে।

আপনার যে কোন প্রশ্ন অথবা অর্ডারে কোন পরিবর্তনের জন্য ০১৮৪৪২১৮৯৪৪ নাম্বারে কল করুন ।